Tuesday, October 20, 2009

ক্ষমতার পালা বদলে বউ বদল করতে চান এক স্কুলশিক্ষক, অভিযোগ স্ত্রীর

ক্ষমতার পালা বদলের সঙ্গে স্ত্রীও বদল করতে চান রায়পুরের স্কুলশিক্ষক আলমগীর হোসেন। সমপ্রতি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার যুবলীগ সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরই তিনি স্ত্রী বদলের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান তার স্ত্রী ও রায়পুরের মধ্য কেরোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা রহিমা আক্তার। ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, তার স্বামী আলমগীর হোসেনও একই উপজেলার লধুয়া এমএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। ২০০৪ সালের ৫ই জানুয়ারি পারিবারিক সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বর্ণালঙ্কার ছাড়াও ঘরের আসবাবপত্র, স্বামীকে সোনার চেইনসহ নগদ এক লাখ টাকা দেয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন যাওয়ার পর তিনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। তার নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিবাদ করতে গেলে রহিমার ওপর নেমে আসে নির্যাতন। বিভিন্ন সময় তার ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। তার পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। ২০০৭ সালের ১২ই জুলাই মোবাইলে ফোন করে আলমগীর হোসেনের জীবন থেকে সরে যেতে তাকে হুমকি দেয়া হয়। না হলে দু' লাখ টাকা যৌতুক দিতে হবে। এ দাবি পূরণ করতে ব্যর্থ হলে রহিমাকে নির্যাতন করা হয়। গত ৩রা জুন নির্দয়ভাবে পিটিয়ে সকল স্বর্ণালঙ্কার রেখে দিয়ে তাকে এক কাপড়ে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। বলা হয়, দু' লাখ টাকা নিতে না পারলে স্বামীর বাড়ি তাকে ফিরতে বারণ করে নিজে অন্যত্র বিয়ে করার হুমকি দেন আলমগীর। গত ২১শে আগস্ট এক সালিশ বৈঠকে রহিমাকে ঘরে ফিরিয়ে নিতে মীমাংসা হয়। সালিশেও দু'লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন আলমগীর। উপায়ান্তর না দেখে গত ২৭শে আগস্ট লক্ষ্মীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে যৌতুক দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন রহিমা। মামলা দায়েরের পর থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগের ক্যাডারদের দিয়ে মামলা প্রত্যাহারে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন আলমগীর। এখন চাকরিচু্যতি ও বউ বদলের হুমকি দিচ্ছে, তিনি ও তার ক্যাডাররা। গত ৪ঠা অক্টোবর আদালত থেকে আলমগীরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও থানা তা কার্যকর করতে অনীহা জানায়। থানা কর্তৃপক্ষের টালবাহানায় গত ১১ই অক্টোবর লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে যান রহিমা। পুলিশ সুপার তাৎক্ষণিকভাবে আসামি গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিলেও থানা পুলিশ এখনও তাকে গ্রেপ্তার করেনি। পুলিশ খুঁজে না পাওয়ার অজুহাত দেখালেও আলমগীর প্রকাশ্যে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। রহিমা বলেন, সন্ত্রাসীদের অব্যাহত প্রাণনাশের হুমকির মুখে স্কুলেও যেতে পারছেন না। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এলাকা ছেড়ে। তিনি নিজের ও সাড়ে চার বছরের শিশু কন্যা তাহা'র জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ঊধর্্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আকুতি জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে শিশু সন্তান ছাড়াও তার ছোট ভাই আবু সালেহ উপস্থিত ছিলেন।

No comments:

Post a Comment