নূরুজ্জামান: সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস নেয়ার পর ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে দাম
চেয়েছিলেন কর্মচারীরা। অপরাধ এটুকুই! এজন্য সিএনজি স্টেশনই দখল করে নেয়া
হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় কার্যক্রম। মারধর করা হয় কর্মচারীদের। ইট, সিমেন্ট
দিয়ে দেয়াল তুলে দেয়া হয় প্রবেশপথে। ঘটনার শুরু রোববার রাতে রাজধানীর
মহাখালী এলাকার ইসা গার্ডেন প্রাইভেট লি. সিএনজি ফিলিং স্টেশনে। এই ফিলিং
স্টেশনের মালিকও ছাত্রলীগের এক সময়কার কেন্দ্রীয় সভাপতি। আর ঘটনার সঙ্গে
জড়িতরা বনানী থানা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতা। মহাখালী শহীদ তাজউদ্দিন
সরণির ৫৩/১ নম্বর হোল্ডিং-এ ওই সিএনজি ফিলিং স্টেশন গতকাল দুপুরে সরজমিন
গিয়ে দেখা যায়, পাম্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
কাজ বন্ধ করে জড়োসড়ো হয়ে তারা বসে আছেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তেজগাঁও থানা
পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে রাতের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা
জানান, ২৪শে মার্চ রাত ১১টার দিকে পরিচয় না দিয়েই ৩-৪ জন যুবক সিরিয়াল
অমান্য করে গ্যাস নেয়ার জন্য ফিলিং স্টেশনে ঢুকে পড়ে। এসময় ফিলিং অপারেটর
(ডিসপেনসারম্যান) মো. রুবেল তাদের ক্রমানুসারে গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করতে বলেন।
এতে যুবকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। অশ্লীল গালিগালাজ করতে করতে গাড়ি থেকে নেমেই
রুবেলকে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারতে থাকে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে ফিলিং স্টেশনের
ইঞ্জিনিয়ার শাহিনুর রহমানও পিটুনির শিকার হন। পরে জোর করেই ৩৯৪ টাকার গ্যাস
নেয়া হয় তাদের প্রাইভেটকারে। এসময় কর্মচারীরা ওই টাকা পরিশোধের জন্য রশিদ
দিলে ফের ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ওই যুবকরা। এদের মধ্যে এক যুবক নিজেকে বনানী থানা
ছাত্রলীগের সভাপতি পরিচয় দিয়ে বলে ওঠে, ‘তুই আমার কাছে টাকা চাইলি, কাজটা
ভাল করলি না। এর খেসারত পাবি।’ এরপর মধ্যরাতে ছাত্রলীগের বনানী থানার
সভাপতি আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে আরও ১৫ থেকে ১৬ জন নেতাকর্মী ওই ফিলিং
স্টেশনে হানা দেয়। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের খুঁজতে থাকে। ম্যানেজারকে পেয়ে
গালিগালাজ করে ফিলিং স্টেশন বন্ধ করতে বলে। একই সঙ্গে স্টেশনের বহির্গমন
পথে বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়। পরের দিন সোমবার রাত
সাড়ে ৯টার দিকে ছাত্রলীগের ওই নেতা ইট, বালু ও সিমেন্ট সহ নির্মাণ
শ্রমিকদের নিয়ে এসে ওই জায়গায় স্থায়ীভাবে দেয়াল তুলে দেয়। যাওয়ার সময় বলে
যায়, ‘এখানে ছাত্রলীগের কার্যালয় হবে, আশপাশে আর কিছু থাকতে পারবে না।’
ঘটনাস্থলের পাশেই দায়িত্ব পালনকারী পুলিশের টিএসআই আজিজুল হাকিম বলেন,
সিএনজি স্টেশনের ভেতরে ছাত্রলীগের ছেলেরা ওয়াল তুলে দিয়েছে। তবে কি কারণে
দিয়েছে তা জানি না। দেয়ালের পাশেই ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ রয়েছে।
ওই বুথের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকারী নিরাপত্তা প্রহরী বলেন, কোন কিছু
বুঝে ওঠার আগেই লোকজন ইটের দেয়াল তুলে দিয়ে চলে গেল। গ্যাস নিয়ে গাড়ি বের
হওয়ার পথে প্রায় ১৫ ফুট লম্বা ও তিন ফুট উঁচু এ দেয়ালের কারণে ফিলিং স্টেশন
ও ব্যাংকের বুথের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইসা গার্ডেন প্রাইভেট লি. সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক মনিরুল হক চৌধুরী। তিনিও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। তবে তিনি এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। এক সময় জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতেন। এখন বিএনপি’র রাজনীতি করেন।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাছ থেকে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে তিনি এই ফিলিং স্টেশন চালু করেছেন ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। যারা দেয়াল তুলে দিয়েছে তারাও ছাত্রলীগের লোকজন। দেয়াল নির্মাণের সময় আমাদের জানালে আমরা কাজ বন্ধ করে দিতে পারতাম। এখন কর্তৃপক্ষকেই দেয়াল ভেঙে ফেলতে বলেছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ নেয়া হলে আমরা দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
এব্যাপারে জানতে চাইলে বনানী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আনিছুর রহমান বলেন, ওই ফিলিং স্টেশনের লিজ অনুযায়ী ১২০ ফুট জায়গা নেয়ার কথা সেখানে তারা দখল করেছে ১৪০ ফুট। এলাকাবাসীর সহায়তায় আমরা এলাকার রাস্তা উদ্ধার করে দেয়ার কথা দিয়েছি। স্টেশন বন্ধ বা দখল করার বিষয় তিনি অস্বীকার করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইসা গার্ডেন প্রাইভেট লি. সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক মনিরুল হক চৌধুরী। তিনিও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। তবে তিনি এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। এক সময় জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতেন। এখন বিএনপি’র রাজনীতি করেন।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাছ থেকে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে তিনি এই ফিলিং স্টেশন চালু করেছেন ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। যারা দেয়াল তুলে দিয়েছে তারাও ছাত্রলীগের লোকজন। দেয়াল নির্মাণের সময় আমাদের জানালে আমরা কাজ বন্ধ করে দিতে পারতাম। এখন কর্তৃপক্ষকেই দেয়াল ভেঙে ফেলতে বলেছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ নেয়া হলে আমরা দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
এব্যাপারে জানতে চাইলে বনানী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আনিছুর রহমান বলেন, ওই ফিলিং স্টেশনের লিজ অনুযায়ী ১২০ ফুট জায়গা নেয়ার কথা সেখানে তারা দখল করেছে ১৪০ ফুট। এলাকাবাসীর সহায়তায় আমরা এলাকার রাস্তা উদ্ধার করে দেয়ার কথা দিয়েছি। স্টেশন বন্ধ বা দখল করার বিষয় তিনি অস্বীকার করেন।
মানবজমিন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০১৩
No comments:
Post a Comment