Monday, October 10, 2011

মা-বাবার দাম্পত্য কলহের বলি রিদিতা


ভেঙে গেছে মা-বাবার সোনার সংসার! এর আগে তাদের মধ্যে চলে কলহ। হয়তো অনেক চেষ্টা করেও মা-বাবার ভাঙা সংসার জোড়া লাগাতে পারেনি সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী রিদিতা। হয়তো এই অভিমানেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিল কিশোরীটি। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নানাবাড়ি থেকে রিদিতার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ভালো নাম দিহান মেহজাবিন রিদিতা। সে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের আজিমপুর শাখার ছাত্রী। মা ফাতেমা সুলতানা চৌধুরী ভিকারুননিসা নূন স্কুলেরই শিক্ষক। বাবা শেখ আলিউজ্জামান হোমিও চিকিৎসক। কিছুদিন আগে আলিউজ্জামান নিজের পিএকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে রিদিতা মায়ের সঙ্গে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টিক্কাপাড়ার হাজি চিনু মিয়া রোডের ১৫এ/৯ নম্বর বাড়িতে থাকত। নিহতের মামা কাওসার চৌধুরী রনী বলেন, গতকাল সকাল সাড়ে ৭টায় বাসার বেডরুমে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় রিদিতার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। এর আধঘন্টা আগে তার মা ফাতেমা সুলতানা স্কুলে চলে যান। প্রতিদিন মায়ের সঙ্গে স্কুলে গেলেও গতকাল শরীর খারাপের কথা বলে বাসায় থেকে যায় রিদিতা। তিনি আরও বলেন, ফাতেমা-আলিউজ্জামান দম্পতি রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে থাকতেন। যাত্রাবাড়ীতেই আলিউজ্জামানের চেম্বার। এই চেম্বারের পিএর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন আলিউজ্জামান। এ নিয়ে কয়েক বছর ধরে ফাতেমার সঙ্গে আলিউজ্জামানের কলহ চরমে পৌছে। প্রায়ই স্বামীর নির্যাতনের শিকার হতেন ফাতেমা।
জানা গেছে, তিন মাস আগে স্বামীর বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় নারী নির্যাতন মামলা করেন ফাতেমা। এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান আলিউজ্জামান। এরপর আপস করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জামিন নেওয়ার পর আলিউজ্জামান আবারও বেঁকে বসেন। মা-বাবার দীর্ঘদিনের কলহ সহ্য করতে না পেরে রিদিতা আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রিদিতার মৃত্যুর ব্যাপারে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। সকালেই মেয়ের মৃত্যুর খবর দেওয়া হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত লাশ দেখতে আসেননি আলিউজ্জামান। এদিকে মেয়েকে হারিয়ে ফাতেমা হয়ে পড়েছেন বাকরুদ্ধ। মোহাম্মদপুর থানার এক এসআই বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে অভিভাবকের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে।

No comments:

Post a Comment